আজ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নগরীর উত্তর কাট্টলী থেকে গাড়ি চোর চক্রের সদস্য গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম রিপোর্টার: সুজন

গত রবিবার (১৩ জুন) আকবরশাহ থানায় ভুক্তভোগী এক ব্যক্তির দায়ের করা মামলার সূত্র ধরে উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডের আচার্য পাড়া থেকে সতীশ চন্দ্র দে এর ছেলে সজল চন্দ্র দে (৪১) নামের এই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।


মামলার এজাহারের বিবরণ থেকে জানা গেছে, মো. সালাউদ্দিন নামের এক সৌদি প্রবাসী সম্প্রতি চট্টগ্রামস্থ তার নিজ বাড়ি আকবরশাহ থানাধীন লতিফপুরের আশ্রাফ সুকানির বাড়িতে ফেরেন।  চলতি বছরের ১৯ মার্চ পাহাড়তলীস্থ দক্ষিণ কাট্টলীর প্রাণ হরিদাশ সড়কের ১৭১৮/১৮৯৬ নম্বর হোল্ডিংস্থ আমির আহম্মদ সওদাগর বাড়ির মৃত আমির আহমেদ এবং মৃত হোসনা বানুর ছেলে মোহাম্মদ জসিমের (৪৭) কাছ থেকে বিধিমোতাবেক একটি ২০০৫ মডেলের এক্স করোলা ব্র্যান্ডের প্রাইভেটকার কেনেন।  এর রেজিস্ট্রেশন নম্বর চট্টমেট্রো-গ-১২-৫৬৮৭, চ্যাসিস নম্বর এনজেডই১২১-৩৩১৫০১, ইঞ্জিন নম্বর ১এনজেড-বি৭২৩৩৬২।  এরপর থেকে তিনি গাড়িটি ব্যবহার করা শুরু করেন।  গত ৯ জুন দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বাদি সালাউদ্দিন আকবরশাহ থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লতিফপুর পাকা রাস্তার মাথায় গাড়ি থামিয়ে এক আত্মীয়ের সাথে কথা বলছিলেন।

  এসময় তিনি হঠাৎই দেখতে পান একই নম্বর ও মডেলযুক্ত আরো একটি প্রাইভেটকার ঢাকামুখী যাচ্ছে।  এসময় তিনি গাড়িচালক মো. নয়নকে চিনতে পারেন।  পরে চালক নয়নের সাথে যোগাযোগ করে ওই

গাড়িটির প্রকৃত মালিক সজল চন্দ্র দে’র ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেন সালাউদ্দিন।  এরপর বাদি সালাউদ্দিন যার কাছ থেকে তার গাড়িটি কিনেছিলেন সেই জসিমকে একই নম্বরের দুইটি গাড়ির বিষয়টি অবহিত করেন।  তারপর জসিম ও বাদি সালাউদ্দিন দুইজন একসাথে মামলার ১ নম্বর আসামি সজল চন্দ্র দে’র সাথে দেখা করে তাদের গাড়ির নাম্বার ব্যবহারের কারণ জানতে চান।  তখন আসামি সজল চন্দ্র দে জানান- তিনি ২ নম্বর আসামি মো. জামাল হোসেন মিয়ার কাছ থেকে ৭ লক্ষ টাকায় গাড়িটি তিনি কিনেছেন।  এরপর ২ নম্বর আসামি জানান ৩ নম্বর আসামি সিরাজুল ইসলাম গাড়িটির কাগজপত্র তৈরি করে দিয়েছেন।  তাদের উপস্থাপিত গাড়ির কাগজপত্রাদি নকল মনে হলে সালাউদ্দিন এই মামলাটি করেন।


মামলায় তিনি আকবরশাহ থানাধীন উত্তর কাট্টলীর আচার্য পাড়ার ননী গোপাল দে’র বাড়ির মৃত সতিশ চন্দ্র দে এবং বতুল বালা দে’র ছেলে সজল চন্দ্র দে (৪১), ফরিদপুর জেলার নগরকান্দাস্থ মানিক কান্দার কদমতলী এলাকার আবু সহিদ মিয়া ও দেলোয়ারা বেগমের ছেলে মো. জামাল হোসেন মিয়া, ঢাকাস্থ গুলশান মডেল টাউনের নিকেতনস্থ ১৪ নম্বর সড়কের ৫১ নম্বর হোল্ডিংস্থ এ/৩ এর ডমইনো ভবনের মৃত ইসহাক শেখ ও নুর জাহান বেগম দম্পতির ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৪২) সহ অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করেন।
মামলার সূত্র ধরে ডিবি পুলিশ সোমবার (১৪ জুন) বেলা পৌনে ১২ টায় মামলার প্রধান আসামি আকবরশাহ থানাধীন উত্তর কাট্টলীর আচার্য পাড়ার ননী গোপাল দে’র বাড়ির মৃত সতিশ চন্দ্র দে এবং বতুল বালা দে’র ছেলে সজল চন্দ্র দে (৪১) কে গ্রেফতার করে।  এসময় তার হেফাজত থেকে ঈশান মহাজন সড়কের মেসার্স খাজা গরীবে নেওয়াজ মোটর্স এর গেইটের সামনে থেকে ব্লু রঙের এক্স-করোলা ব্র্যান্ডের প্রাইভেটকার (রেজিস্ট্রেশন নম্বর- চট্টমেট্রো-গ-১২-৫৬৮৭, NZE১২১-৩৩১৫০১, ইঞ্জিন নম্বর ১NZ-B৭২৩৩৬২, ফিটনেস সনদপত্র নাম্বার- FC- 7343644, রেজিস্ট্রেশন সনদ নম্বর RC- 0159239 এবং টেক্স টোকেন- নম্বার ৪৮৯৪৪) জব্দ করে।


মামলাটির তদন্তের দায়িত্বে থাকা সিএমপির মহানগর গোয়েন্দা (উত্তর) বিভাগের উপপুলিশ পরিদর্শক মো. আলমগীর হোসেন গ্রেফতার সজল চন্দ্র দে’র ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, আমরা গ্রেফতার আসামিকে গাড়ি চোরচক্র এবং ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে তা অন্যের কাছে বিক্রির যে চক্রটিকে নজরদারি করছি সেই চক্রের সদস্য বলে ধারণা করছি।  তারা প্রতারণার মাধ্যমে চুরি করা গাড়ি ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে যুক্ত।  আমরা আসামিকে ১ দিনের রিমান্ডে পেয়েছি।  মামলাটি যেহেতু তদন্তাধীন, সেহেতু বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না।  রিমান্ডে আসামির কাছ থেকে এই চক্রে আর কারা কারা জড়িত সেই বিষয়ে জানার চেষ্টা করছি।  তিনি আরো বলেন, মামলার অন্যান্য আসামিদেরও আমরা গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

     এই বিভাগের আরও খবর